বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১০

বছরের শেষ; শুভ বিদায় ২০১০

কী অদ্ভুত ব্যাপার, ২০১০ আর কখনও আমাদের কাছে আসবে না; প্রতিনিয়ত আমরা তাকে হারাতে হারাতে এখন একদমই শেষ লগ্নে।

বছরটি আমার কাছে অনেকাংশে ঘটনাবহুল। বছরের শুরুতেই খুব সাহস করেই প্রতিষ্ঠিত চাকুরী ছেড়ে সফট্ওয়ার ফার্ম Leads এ যোগ দিয়েছিলাম। ঘটনাটি ছিল আমার কাছে অত্যন্ত সাহসিকতার। খুব বিপদ হত যদি কিনা আমার ভাগ্য আমার সহায় না হত। কিন্তু বছরের শুরুতেই ডিবিবিএল এর মৌখিক পরীক্ষার কার্ড আমার ভগ্ন মানসিকতাকে চাংগা করে তুলেছিল। হঠাৎ করেই রুগ্ন থেকে আমি হয়ে উঠেছিলাম সবল ও তরতাজা। বছরটি আমাকে সহায়তা করেছিল জীবনযাত্রার মান টাকে অনেক পরিবর্তন করতে। সরাসরি উত্তরা থেকে ধানমন্ডি। ভালোই যাচ্ছিল সবকিছু। কিন্তু ধীরে ধীরে কেমন যেন বাড়ী থেকে দুর হয়ে যাচ্ছি গদবাধা এই জীবনের জন্য। ক্ষনেক্ষনে অনেক কিছু হারাচ্ছি, নি:স্ব হবার আগেই আমাকে কিছু করতে হবে। জানি না আগামী বছর আমাকে কতটা সাহায্য করবে। স্বপ্নের জীবন থেকে আমি অনেক দূরে।জীবন বলতে আছে শুধু প্রানটি, আত্মা দিনদিন রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে। ওকে বাচানো খুব দরকার। চোখ বন্ধ করলে শুধুমাত্র বিপর্যয়ই চোখে পরে; আর কিছুই নয়। আমার চারিদিকে বিষন্নতা আমার দমটা আটকে ফেলে।আগামী বছর আমাকে উদ্ধার করলেই আমি বাঁচি

বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১০

ছেড়ে যাওয়া

আমি খুব বকবক করতে পারি, কিন্তু মনের কথা প্রকাশ করতে পারি না কথা দিয়ে। খুবই সমস্যা। আজ আমার এক প্রাণপ্রিয় সহকর্মী চলে গেল। খারাপ লাগছিল, খুব কান্নাও পাচ্ছিল; কিন্তু মনের শীতের এই সময় অত্যাধিক আদ্রতায় চোখের জলও শুকিয়ে যাবার মতন। বাস্তবতা থেকে আমার অবস্থান অনেক দুরে। আমার দুনিয়া স্বপ্নের মধ্যই বেশী ঘুরপাক খায় অনেকটা নেশাগ্রস্থ মানুষের মতন। আমিও সবসময় থাকি স্বপ্ন নেশায় বুদ হয়ে। আসলে, জীবনটা জুড়েই ত্যাগের সিড়ি; প্রতিনিয়ত আমরা ত্যাগের সঙ্গেয় থাকি। কিছু ত্যাগ না করলেও অন্তত সময় বাবাজীকে সব সময় আমরা ত্যাগ করছি। প্রতিটা ত্যাগের মধ্যে দিয়ে আমাদের শিখা উচিত, শিক্ষনটা হতে পারে বহু মাত্রিক। আসলে কোন অবস্থানই কখনও চরম নয়; সবসময় আমাদের চরমতর অবস্থানের দিকে এগুতে হবে। আমার মতো অকর্মন্য ভাষন গুলো খুবই সাহিত্যময় হয়।

শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১০

আমার মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি

বিজয় দিবস আর স্বাধীনতা দিবসের আনন্দটা আমার কাছে অন্যস্বাদের। ১৬ই ডিসেম্বর আর 2৬শে মার্চ প্রতি বছরই আমার কাছে ধরা দিত অন্যভাবে। খুব কাছ থেকে আমি উপলব্ধি করতাম বছরের এই সময়টাকে। প্রতি বছরই আমাদের স্কুলের স্কাউট দল অংশগ্রহন করত বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। তার জন্য ১‍মাস ধরে চলত অনুশীলন। শরীরচর্চা ও ডিসপ্লের কাজ। ডিসপ্লে অংশটা ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। ৭১ সালের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আমরা আয়োজন করতাম নাট্য প্রদর্শনীর। আমাদের মঞ্চ ছিল সমগ্র মাঠ। সেখানেই একটি ক্ষুদ্র যুদ্ধের মহরা ও কিছু ঘটনার সন্নিবেশ করে তুলে ধরতাম সেই কাল সময়গুলো। অভিনেতারা সবাই থাকত নির্বাক, একজন মাইকের মাইক্রোফোনে ফুটিয়ে তুলতো সবার উক্তি; মানুষের আহাজারি, মিলিটারীর দম্ভোক্তি , রাজাকারের উল্লাস কিংবা মায়ের করুন আহাজারি। স্কুলের সেই দিনগুলোতে কতকিছুই না করেছি। ধীরে ধীরে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা থেকে হয়ে উঠেছিলাম মুক্তিযোদ্ধাদের দলনেতা। রাজাকার এর চরিত্রটা বরাবরই ছিল আমার কাছে খুব ঘৃণার। কিন্তুর আমার অভিনয় প্রতিভার জন্য আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক একবার আমাকে দিয়ে রাজাকারের চরিত্র করিয়ে ছিল। সে এক অন্যরকম অনুভূতি। সবাই সেদিন আমার অভিনয় দেখে গাল দিয়েছিল; কিন্তু সেই গালটাও ছিল অনেক আনন্দের আমার কাছে। শেষের ২টা বছর আমি ছিলাম পাঠক। সবার অভিনয় দেখে আমার তাদের উক্তি গুলো মাইক্রোফোনে বলতে হত। সে এক বহুরুপী অভিজ্ঞতা। একঐ কন্ঠে একই সাথে হাজারো রকমের কথা। যেন পুরো যুদ্ধের শব্দটা আমার মুখ দিয়ে বের হত। সামরিক বাহিনীর কুচকাঔয়াজ স্কুলের দিন গুলোতে আগে সেভাবে দেখতে পেতাম না সংবাদ ক্লিপিং ছাড়া। আর এখন সামরিক মহড়া দেখি, আর ভাবি কোথায় হারিয়ে গেল আমার যুদ্ধের দিন গুলি।

বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১০

আবারও শিক্ষক হলাম ক্ষণিকের তরে

প্রস্তাবটি হঠাৎ পেলাম বসের কাছ থেকে। জানিনা বস কেন আমাকে ভাবল কাজটি করার জন্য। খুব ভালো লাগলো শোনামাত্র; অনেকদিন বাদে পুরাতন ভূমিকায় কাজ করবার সুযোগ। প্রস্তুতি ছাড়াই মঞ্চে উপস্থিত আমি; মুখে ছিল আমার স্বভাবসুলভ আগোছালো দাড়ি, পরনে ধার করা ব্লেজার আর টাই। পরিচয়ের পর্বটা একটু তিমিরাচ্ছন্ন; আসলে ব্যবসার জন্য অনেক কিছুই করতে হয়। ধীরে ধীরে সময় শেষ হল কখন বুঝতে পারলাম না। উদারীক ও অর্থনৈতিক ভালোবাসার অভাব ছিল না যদিঔ পুরোটা পাইনি।
বসকে বারংবার ধন্যবাদ দিব আমাকে ভলোবাসা দেবার জন্য; বিশ্বাস করুন স্যার, ভালোবাসার বিনিময়ে আমি অনেক কিছু করতে পারি

শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১০

একটি মুখোশ দরকার

একটা মুখোশ আমার খুব দরকার। আসলে যাদের নেই, তাদের সবারই দরকার। মুখোশটার কাজ হবে মনের সত্য সরল কথা গুলোকে ঢেকে রেখে সবসময়ই মৃদু হাসি সম্বন্বিত মুখটাকে সবার সামনে তুলে ধরা। ভিতরের মানুষটিকে যদি কেউ সহজে দেখে ফেলে তাহলে আপনার বিপদ ঠেকাবে কে; আপনার তো আমারই মত অবস্থা- নিশ্চয়-মামা খালুর খুব অভাব। নিদেন পক্ষে আমার দেশের কর্পোরেট কালচার সেরকমেরই জানান দেয়।
পৃথিবীর অন্যতম রাষ্ট্রের কর্ণধর যখন কাজের সুন্দর পরিবেশ তৈরী করবার লক্ষ্যে একটি বন্ধুবৎসল পরিবেশ সৃষ্ঠির জন্য সদাব্যস্ত এমন ছবিও প্রযুক্তির কল্যানে মানুষের ঘরেঘরে; ঠিক তখনই চোখের সামানে দেখতে হয় সম্মান হারানোর ভয়ে দেশীয় কোন এক মেকী কর্মকর্তা ঈদের কোলাকুলি করতেও পিছপা হচ্ছে। কী আশ্চর্য্য এ দেশ, আমাদের মেকী কর্পোরেটম্যান(হনুমান)।

সবসয়ই মনে হয়, শিশুদের সবসময় 'হ্যাঁ' বলতে নেই। শিশুকে সদা 'হ্যাঁ' বলবার অভ্যাস আপাত তাকে আনন্দ দিলেও, উপযুক্ত মানুষ করলেও; কোন একদিন এজন্যই পেতে হবে তাকে দু:খ।কারণ কর্পোরেট কালচারের মানুষের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন দক্ষ সঙ এর।