বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০১১

নামযজ্ঞ উপলক্ষে বাড়ী ভ্রমন

গত ২৩ শে ফেব্রুয়ারী বাড়ীতে গিয়েছিলাম। সকাল ১০ টার সময় রওনা দিয়ে পৌছেছিলাম রাত ১১ টার দিকে। এক ফেরীঘাটেই লেগেগেছে ২ ঘন্টার পরিবর্তে ৭ ঘন্টার মতন। হায়রে অবহেলিত দক্ষিনবঙ্গ। বাড়ী থেকে রওনা দিয়ে কোলকাতা পৌছাতেও আমার এত সময় কখনও প্রয়োজন হয়নি। এত সময় লাগে বলেই, মনটা বাড়ীতে পড়ে থাকা স্বত্ত্বেও বাড়ীতে যাওয়া বছরে এক দু'বারের বেশী হয়না। একটি সেতুই পারত বঙ্গমায়ের অংগকে কাছে আনতে পাশাপাশি আমার মতন ঘর ছাড়া মানুষকে একটু ঘরের কাছে পৌছে দিতে। অর্থনৈতিক লাভ আমার চিন্তার বাইরে থাকুক। ২ দিনের নেওয়া ছুটির একদিন চলে গেল বাড়ীতে পৌছাতেই।
বাড়ীতে ১ম বারেরে মতন অনুষ্ঠিত হল ৮ প্রহর ব্যাপী নামযজ্ঞ অনুষ্টানের। অনেক আগে থেকেই চলছিল প্রস্তুতি, আমি যেয়ে দেখলাম প্রস্তুতির শেষের দিকটা।আমার মনের মধ্যে লাগছিল এক অন্যরকমের অনুভূতি যা আগে খুব কম লেগেছে। অনেকদিন না দেখা হওয়া আত্মীয়স্বজনের স্বাক্ষাতি শুধু নয়, এক বারে এত মানুষের সাথে দেখা হওয়ার অনুভূতিটাই অন্যরকম; যদিও আমি কখনই কারোর সাথে সেভাবে কথা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত নি যদি কিনা খুব বেশী প্রয়োজন না পড়ে।
নামযজ্ঞ অনুষ্টানে মোট কীর্তনীয়া সম্প্রদায় ছিল ৪ টি, আমার মামার দলটি সহ। দল গুলোর আয়োজন মামাই করেছিল।
কাজের মধ্যে আমি করেছিলাম, এক বাজরের প্রতিটা দোকানে যেয়ে নিমন্ত্রণ করা; একাকী নয়, তরুনের সাথে।
রাতে কীর্তন হবার পর অধিবাস; আমার ক্লান্ত দেহ খানা বাধ না মেনেই বিছানায় গড়িয়ে পরেছিল। পরদিন সকালে নামের সূচনা, খুব ভোরে। প্রথম দল আসার আগ পর্যন্ত মামার সাথে আমি ও মনতোষ মামা অবস্থান করেছিলাম।
সারাদিন ও রাত নাম চলল। পরেরদিন সকালে সমাপ্তি। তার পর নগর ভ্রমন। অনেক মজা করেছিলাম পাড়ার সব বাড়ী গুলো ঘুরেঘুরে। সাথো ঠাকুর নিয়ে ছিল দাদা আর প্রিয় শ্যামল দা। অবশেষে ঠাকুরকে ভোগ নিবেদনের পর ভোগ বিতরণ ও অনুষ্টানের সমাপ্তি। সাথে সাথে সমাপ্তি আমার ছুটিরও। কিন্তু বাড়ী ছেড়ে আসা দায়; আমারও কখনই ইচ্ছা করে না কখনও বাড়ী থেকে অন্য কোথাও যায়। কী আর করা, ছুটির জন্য আবেদন মোবাইলে। ছুটি পেয়েছিলাম কিন্তু সার্ভিসরুল অনুযায়ী শুক্র শনিবার কেও আমার ছুটির মধ্যে গননার শর্তে। আমার ছুটি হল মোট ৫ দিন; বছরের প্রথমেই ১৫ দিনের ৫ দিন শেষ। সার্ভিস রুল মানতে ভালোই লাগে; কিন্তু সেটা সবসময় মেনে চলা উচিত।(চাচীর ছালুনের জাগায় জাগায় ঝাল!!)
অবশেষে রোববার রাতের গাড়ীতে ঢাকায় ফেরা; অন্যভাবে না, আগের মতন ফেরী ঘাটে ৬ ঘন্টা বিলম্ব করে।