মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ডিবিবিএল আইটি অফিস পিকনিক-২০১১

২১ শে ফেব্রুয়ারী অফিসের পক্ষ থেকে বনভোজনে গিয়েছিলাম, স্থান-প্রশিকা, মানিকগঞ্জ। দিনটি নিয়ে সবার মতন আমার মনেও বেশ আপত্তি ছিল, যদিও তার বহিঃপ্রকাশ উপযুক্ত স্থানে ছিল না। এই সব অনুষ্ঠান সম্পর্কে আমার ধারণা ছোট বেলা থেকেই খুব খারাপ, তার পরেও অফিসে প্রথম বারের জন্য হওয়ায় হালকা উৎসাহ মনের মধ্যে লালন করেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সময় মতনই সহকর্মী নির্ঝর দা ও তপন দাকে নিয়ে হাজির হলাম নির্ধারিত স্থানে। লটারী নামক একটি যন্ত্রনাময় জিনিস ডিবিবিএল পিকনিকের সাথে আষ্টেপিষ্টে লেগে আছে, আর সেই যন্ত্রনা বন্টনের দায়িত্ত্বটা ছিল আমার ও নির্ঝর দা'র উপর। চেষ্টা করেছিলাম বাসে উঠবার আগ পর্যন্ত কিন্তু তার পরে আর নয় আমার কাছ থেকে।
ওখানে যাবার পর বুঝতে পারলাম, আসলে পিকনিকটা আমাদের জন্য নয়। ডিবিবিএল বর্নবাদে বিশ্বাসী। এখানে দুটি জাত আছে: ১। কোর টিম ২।আনকোরা টিম(!)। আর কোথাও না হলেও আইটি ডিবিশনে এটা খুব প্রচলিত বর্ণ প্রথা। তথা কথিত কোর টিমের কাজ হল সব সময় এটা বুঝিয়ে চলা তারা সবার থেকে আলাদা এলিট সম্প্রদায়ের মানুষ। পিকনিকটাও সেই উচ্চবংশীয় কোর টিমের জন্য। আনকোরা টিমের কাজ হল তাদের বিনোদনের উপকরণ হওয়া। এরা না থাকলে ওটা পিকনিক ভাবের সৃষ্ঠি করে না শুধু মাত্র এজন্যই আমরা। পিকনিকের আরম্ভলগ্নেই কোন এক নেতার মুখ থেকে উচ্চরিত হল সেই যুদ্ধের দামামা।"এখন ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্টিত হবে কোর টিম বনাম অন্যান্যরা"। সারা বছরের সকাল থেকে মধ্যে রাত্রি পরিশ্রমের পর প্রিয একটি ছুটির দিন হারিয়ে জাতীয়তা বিসর্জন দিয়ে আনকোরা সবাই হাজির হয়েছে একটু নির্মল আনন্দ পাবার আশায়, কর্তাব্যাক্তিদের একটু অন্যভাবে পাবার জন্য। আর কোরমার্গীয়রা হাজির হয়েছে, একমাত্র মাঠ টিকে আটকে রেখে তাদের লীলাখেলা দেখানোর আশায়। আসলেই না হলে এটা কোর হবে কেন, যদি মৌলত্ত্বই না থাকল।
বিকালে শুরু হল, আনকোরাদের দর্শক হবার পর্ব। তারপর বাসায় ফেরার লগ্ন।
ভেবেছিলাম, অন্যকিছু হবে। অনেক মজা করব। উপভোগ করব নিজের মত। কিছুটা পেরেছি। কিন্তু সেটুকুও ম্লাণ হয়ে গেল রাজার নিজের রাজ্য নিজে দখল করবার খেলায়। আমার অন্য অভিজ্ঞতার থেকে আলাদা কিছু নয়।
কেউ আমার ব্লগ পড়ে না, আমি সেটা আশাও করিনা। আমাকে যারা ব্যক্তিগত ভাবে চেনে তারা সকলেই জানে আমি একটি সমস্যাপূর্ণ মানুষ, যেখানেই যাই সবখানেই সমস্যা। অন্য কারোর কাছে এই পিকনিকের অভিজ্ঞতাটিই হয়ত অনেক আনন্দের স্মৃতি বহুল। দ্বিমত পোষনকারী যারা, তাদের ভালোলাগার জন্য একটি ছোট্ট গল্প দিয়ে শেষ করবঃ
এক রোগীর সারা শরীরে খুব যন্ত্রনা। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে সে ডাক্তারের শরণাপন্ন হল। ডাক্তার সাহেব তার সারা শরীরে পরীক্ষা করে দেখল তার কোথাও কোন ব্যাথা নাই। রোগীকে বলা মাত্র সে তো আকাশ থেকে বলল, কী বলেন ডাক্তার সাহেব। এই দেখুন আমি যেখানেই আঙুল রাখছি সেখানেই ব্যাথা পাচ্ছি, আর আপনি কিনা কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। তখন ডাক্তার দেখল, রোগী যে আঙুল দিয়ে তার শরীর টিপে দেখছে তার সেই আঙুলটাতেই ব্যাথা।

আমার সমস্যাটা হয়ত আমার আঙুলটাতেই।

মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

সেই ভালো লাগা

তখন কর্নফুলী কাগজের রমরমা অবস্থা। আমি ছোটবেলা থেকেই কাগজ কলমের বিষয়ে খুবই সচেষ্ট ছিলাম। আমার বাবু সবসময়ই আমার সেই সচেষ্টতাকে সর্ম্মান জানিয়েছেন। তাই প্রথম থেকেই আমার লেখার খাতা গুলি কর্নফুলী কাগজ দিয়েই তৈরী করে দিতেন তিনি। বই, খাতা ও নিজের কলমের প্রতি ভালবাসা প্রথম থেকেই আমার খুব বেশী। খাতার কাগজ ছেড়া কিংবা অপরিস্কার করা আমি কখনই বরদাস্ত করতাম না। আমার এই মানসিকতাটি এখনও একটু মৃদু হলেও রয়ে গেছে।

তৃতীয় শ্রেনীতে সবে উঠেছি, প্রথমও হয়েছি। মানসিক ভাবে নিজেকে সবসময় খুব অন্যরকম মনে হত; যদিও নিজের কদসুরত দেখে প্রায়ই নিজেই মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পরতাম। কিন্তু সব কিছুকে উপেক্ষা করে আমার বেঞ্চের বিপরীতে ঠিক আমার সামনে বসা ছোট্ট মেয়েটিকে আমার খুব ভালো লাগত। ওর নামটি ছিল শশী। খুব বেশী কথা কখনই হয়নি।কিন্তু ওর সুন্দর মুখশ্রীর চোখে আমি সবসময়ই হারিয়ে যেতাম। আর তাই হারিকেনের আলোয় বসে অনেক গোপনীয়তা রক্ষা করে নিজের নতুন ক্লাসে উঠে তৈরী করা নতুন খাতার পৃষ্টা ছিড়ে আমি লিখেছিলাম কয়েকটি লাইন। একবার না; কয়েকবার। অবশেষে চূড়ান্ত একটি। মনে পড়ে খুব সুন্দর নিখুঁত ভাঁজ করে রেখেছিলাম আমার বইয়েরই কোন পৃষ্ঠাতে। ওকে দিব দিব করে সাহস সঞ্চয় করতে করতে একদিন শুনতে পেলাম ও স্কুল ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে ওর বাবার স্টেশন মাস্টারের চাকুরীর সুবাদে। আমার মনটা ভেঙ্গে গিয়েছিল। আমার এই ভালো লাগাটাও আকস্মিক ধাক্কা খেয়েছিল সেদিন; হয়ত ভালোই হয়েছিল, নতুবা খুব অল্প বয়সেই ইভটিজিং এর দায়ে আমাকেও কোন শাস্তি পেতে হত!!! ওর ধর্মছিল মুসলিম। সেদিন আমার ধর্মজ্ঞান ছিল না। ছিল শুধু ভালো লাগা। ওর মুখটা এখনও আমার সামনে একটা প্যাটার্নের মত দেখা দেয়। মনে হয় যদি কখনও ওকে দেখতে পেতাম, তবে বলতাম সেই গোপন ভাললাগার কথা; হয়ত কোন এক অংকুরের বিনাশের কথা।
অনেকেই আমার হাতের লেখার প্রশংসা করে থাকে; তাদের আমি মজা করে বলি-যদি ক্লাস থ্রি তে কেউ চিঠি লেখা শুরু করে তবে তারও সুন্দর হাতের লেখা হবার একটা সম্ভাবনা আছে!!!

মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

সরস্বতী পূজা ও আমি

সরস্বতী পূজা প্রতি বছরই একটি নতুন মাত্রা নিয়ে আসে সেই ছোট বেলা থেকেই। আমি আজও কেমন যেন মনে করতে পারি সেই দিনটাকে যেদিন দেবী মায়ের সামনে পুরোহিত মশাই আমার হাতখড়ি দিয়েছিল। খুব মজা লাগত যখন প্রতিবছরই নতুন বই দেবী মায়ের সামনে রেখে নতুন বছরের পড়াশোনার প্রস্তুতি নেওয়া হত; ঠিক করা হত নতুন কোন লক্ষ্যমাত্রা।পূজার দিনটি চলত না কোন রকমের পড়াশোনা।খাবার দাবারের রকমটিও ছিল ভিন্ন স্বাদের। পূজার আগের দিন মা তৈরী করে বিভিন্ন রকমের মোয়া,দই, খই। সবই পূজার জন্য, পরোক্ষভাবে আমার জন্য। পূজার দিনটি আমাদের বাড়ীতে খুব ভিড় হয়। আমার মায়ের অনেক ছাত্রছাত্রী, তাদের পরিবার, পাড়ার ছেলেমেয়েরা আসে আমাদের বাড়ীতে।
যখন মাধ্যমিকস্তরের ছাত্র তখন পূজার পরই চলে যেতাম স্কুলের পূজাতে। সেখানের মজাটা ভিন্ন স্বাধের যেখানে পূজার থেকেও বড় হয়ে ওঠত অন্য কোন কিছু। সরস্বতী পূজাকে কেন্দ্র করে জীবনে একটি স্বাদ আমার অপূর্ণ আছে। সবসময়ই স্কুলের পূজা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ত্বে থাকত দশম শ্রেনীর ছাত্ররা। ষষ্ঠ শ্রেনী থেকেই সব সময় ভাবতাম কবে আমিও পূজার চাঁদা আনবার জন্য ক্লাস টাইমে প্রত্যেক শ্রেনী কক্ষে যাব, রাত জেগে পূজা আয়োজন করব, মানুষের বাড়ীতে যেয়ে কাঠ, ফুল যোগাড় করব। স্বাদটা অপূর্ণই রয়ে গেছে আমার। এখন খুব মনে পড়ে বার বার এটি।

পূজার আগের দিন রাতে ফুল যোগাড় করার একটি লক্ষ্য থাকতো সবার। কে কত ফুল আগামীকাল মায়ের পায়ের কাছে জড় করতে পারে; আমার অংশগ্রহন তেমন কখনই হয়নি। আমার দাদা ছিল ফুল জোগাড় করবার গুরু। আর আমি পাহারা দিতাম নিজেদের বাড়ীর ফুল গুলা যৈন কেউ না নিতে পারে। তবে একবার পলাশ ফুল যোগাড় করবার জন্য সাইকে নিয়ে বেড়িয়েছিলাম। এডভেঞ্চারই মনে হচ্ছিল, কারণ ফুল খুবই কম পাওয়া যায়।

যখন পড়াশোনার জন্য কোলকাতা ছিলাম, তখন একটি বিষয় আমার চোখে পড়ে। ওখানকরা ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভ্যলেনটাইন ডের দেশীয় সংস্করণই হল এই পূজা। কারণ এই দিনে প্রতিদিনের দৃশ্যমান সহপাঠিনীটিও শাড়ী পরে নারী রূপে প্রথম মনে দোলা দিয়ে যায়, আসলেই মনে ফড়ফুরে মৃদু বাতাস লাগবার মতনই বিষয়। আর আমারও মনে পড়ে সেই সময়টিতে কেন আমার মনে পূজা আয়োজন করতে না পারার দুঃখটা এখনও বিধে আছে। কারণ পূজা আয়োজন করা ব্যাতীত বাস্তবের মনদেবীকে খুব কাছে পাবার সুযোগ বছরে খুব কমই কিন্তু আসে।

এখনও পূজার দিনটি আমার মন ঘুরে বেড়ায় আমার বাড়ীতে আমার পরিবারের সাথে; খুব মন খারাপ হয় এটা ভেবে কেন বড় হয়েছিলাম। এটাও সব সময় মনে হয় যদি পড়াশোনা শিখে বাবা মাকে দাদাকে ছেড়ে দূরে কোথাও থাকতে হবে এটা জানা থাকলে এই পড়াশোনা আমি কখনই শিখতাম না।

রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

গিয়েছিলাম BASIS SoftExpo ২০১১

প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল তথ্যপ্রযুক্তি বিজ্ঞানের টুকটাক খোঁজখবরাখবর রাখার অংশ হিসাবে গত ৫ই ফেব্রুয়ারী Basis SOFTEXPO 2011 থেকে ঘুরে এলাম; সাথে ছিল সহকর্মীরা। মেলাতে অনেক ত্বাত্ত্বিক ও কারিগরী সেশন অনুষ্টিত হয়েছে। আমার উদ্দেশ্য ছিল Application Development in Android Platform ও Agile Project Management - Scrum or Kanban Development Methodology উপর অনুষ্টিত সেশন দুটিতে অংশগ্রহন করা। প্রথমটির অভিজ্ঞতা অতটা সুখকর নয় যতটা আশা করেছিলাম আর ২য় টির অভিজ্ঞতা ঠিক ততটাই বেশী ভালো যতটা কম আশা করেছিলাম। প্রথমটিতে সাধ পেলাম নতুন প্রযুক্তির অংকুরোদগমনের; সাথে সাথে মানুষের ধৈর্য্য ও অভিব্যক্তির ক্রমাগত অবনমনের উদাহরণের।
আমার ধারনাটা যেরকম ছিল সেরকমেরই কাছাকাছি। BASIS কর্তৃক ইমেইলে পাঠানো সিডিউল দেখেই স্পীকারদের মান সম্পর্কে আমার এর থেকে বেশী ভালো ধারনা হয়েছিল না। কারণ প্রতিষ্টান আর ব্যক্তি যেখানে যেটার ভর বেশী সিডিউলে সেই নামগুলোই ব্যবহার করেছিল। তারই অংশহিসাবে গরহাজির দিতে আসা স্পীকার Application Development in Android Platform সেশনের দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের এক টিকিটে পাঁচটি সিনেমা(! ভিডিও ক্লিপিং) দেখিয়ে অনেকটা হতাশই করেছে।
কিন্তু আমি সার্থক হতে পেরেছি Agile Project Management - Scrum or Kanban এর উপর অনুষ্ঠিত সেশনটির একজন উপভোগকারী হতে পেরে। দুজন স্পীকারই আমাকে মুগ্ধ করেছে আমাদের পুথিঁগত বিদ্যাকে আকর্ষনীয় ভাবে উপস্থাপন করে। বিশেষ করে, NHM Tanveer Hossain Khan এর অংশটুকু আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল; তার সাথে সাথে আমার মনে একটি প্রশ্নেরও অবতরণা করেছিল- বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কেনই বা নিদেন পক্ষে Software Engineering বিষয়টিকে ব্যবহারিক জ্ঞানধারী ব্যাক্তিকে দিয়ে না পড়িয়ে পুথিগত শিক্ষায় বিশ্বাসী শিক্ষকদের দিয়ে পড়িয়ে থাকে। আমি কখনই মনে করিনা যে তারা আমাদের কোন কিছুতে কমতি রাখে, তারপরও মনে হয় এই সেক্টরে কাজ করে এমন কাউকে দিয়ে পড়ালেই প্রথাগত শিক্ষাজীবনান্তে কর্মজীবনে সেটি বেশী ফলদায়ক হয়,

প্রতিটি কর্মকান্ড সমাপন্তে আমার সবসময়ই মনে হয়, কেন কাজটি আরো ভালো করে করলাম না। আসলে প্রতিটি সেশন ই হয়তবা খুবই শিক্ষানীয় ছিল; সেশনগুলো একদিনের কিছু সময়ের মধ্যে সব ধারনা হয়ত দিতে পারে না, কিন্তু মনের মাঝে বীজ বপন করে দেয় নতুন কোন ভালো কিছু করবার প্রেরণা। এই সব অনুষ্ঠান গুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত সকল প্রতিষ্ঠানেরই অংগ্রহন নিশ্চিত করা প্রয়োজন, আর প্রতিষ্ঠান প্রধান গনের উচিত এই সকল অনুষ্ঠানে অধস্তন কর্মীদের অংশগ্রহন বাধ্যতামূলক করা।

শুক্রবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১১

ফ্যান্টাসী কিংডম-Fantasy Kingdom

ফ্যান্টাসী কিংডম, ঢাকার কাছাকাছি ঘুরে আসার জন্য একটি ভালো স্থান। তবে সবখানেরই মতন এখানে যাবার আগে অনেক কিছউ জেনেশুনে যাওয়াটা খুবই দরকার; তাহলে আপনার ভ্রমনটি আরো বেশী আনন্দের হতে পারবে। আমিও খুঁজে ছিলাম, কিন্তু উপকারী কিছু পাইনি; এজন্যই পরবর্তী ভ্রমনকারীদের জন্য আমার এই (অপ)প্রয়াস,কারোর উপকারে আসলে ভালো লাগবে।
প্রথম বিষয়: যাতায়াত: ঢাকা শহরে ব্যক্তিগত গাড়ীর সংখ্যা খুব একটি কম না; তো যাদের গাড়ী আছে তাদের উচিত হবে সেটিকে সাথে নিয়ে যাওয়া; তাহলে কিছু মানুষ বাসে করে শান্তিতে যাইতে পারবে। বাস বলতে ঢাকার কেন্দ্রস্থল ফার্মগেটের তেঁজগা কলেজের সামনে থেকে সরাসরি একমাত্র একটি গাড়ী "হানিফ পরিবহন"; দূরগামী যাত্রায় নিরাপদ বন্ধু হলেও সাভারের আশুলিয়ায় পৌছে দেবার জন্য এটি আপনার শত্রুতেও পরিনত হতে পারে। শান্তিতে যাবার জন্য ছুটির দিনটিতে একটু কষ্ট করে সকালে বের হলে ভালো হয়; যদিও চাকুরীজীবিদের জন্য এর থেকে দুর্দশার আর কিছু হতে পারে না। রাস্তায় প্রতিদিনকার বন্ধু যানজট আপনাকে কিছু সময় পর পর সঙ্গদেবে, এ বিষয়ে চিন্তার কিছু নেই। পৌছাবতে সময় লাগবে দুই ঘন্টার মতন।

পৌছানোর পর চিন্তা করতে হবে আপনার সর্বসঙ্গী উদর কি বলে। আপনি যদি মানিব্যাগে টাকা গুনে গুনে নেন সেক্ষেত্রে ভালো হবে ঢুকবার আগে নিকটবর্তী কোন রেস্টুরেন্ট থেকে ভালো করে সেবা করে নেওয়া; আর অগনিত হলে সমস্যা নেই অর্থ প্রবাহের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা। প্লিজ সঙ্গে করে এটিএম কিংবা ভিসা বা মাস্টারকার্ড নিয়ে স্মাট হবার চেষ্টা করবেন না; তাতে আপনি বিফল ও হতে পারেন।

ফ্যান্টাসী কিংডম এর পাশেই ওয়াটার কিংডম ও হেরিটেজ পার্ক। সব জাগাতেই আলাদা আলাদা টিকিট করে ঢুকতে হবে। ফ্যান্টাসী কিংডমের রাইড সংখ্যা ১১ কি ১২ টার মতন। আলাদা আলাদা ভাবে ফ্যান্টাসী কিংডমে খরচ পরবে ৭০০ টাকার মতন, আপনি প্যাকেজ নিতে পারেন ৫০০টাকার; তাহলে ফ্যান্টাসী কিংডম ও ওয়াটার কিংডম প্রবেশ সহ ফ্যান্টাসী কিংডমের ৯টি রাইড আপনার জন্য অপেক্ষা করবে। তবে প্রথম বার গেলে সেটা না করাই ভালো। কারণ আপনার জানা নেই কোনটির বিনোদন কিরকম হবে। অনেক রাইড আছে যেগুলো অধিকভীতি সম্পন্ন, অপ্রকৃতিস্থ, গর্ভবতী ও হৃদরোগীদের জন্য বড়ই বিপদজনক বলে তারা দাবী করে। সূতরং সেখানে প্রবেশের পর আপনি য়াচাই বাছাই করে তারপর পছন্দ করে নিবেন কোনটি আপন সহ্য করতে পারবেন।

আমার পরামর্শ,ফ্যান্টাসীতে যাবার আগে অবশ্যই হেরিটেজ পার্কে যেয়ে সেখানকার হালকা উত্তেজনাকর রাইড গুলো চড়ে নেওয়া, সেটাই সম্ভবত আপনাকে বেশী সুখ দিবে বলে আমার ধারণা; হেরিটেজ পার্কের সব রাইড গুলোর প্যাকেজ একত্রে ৮০ টাকা। আপনি আলাদা ভাবে চড়তে পারেন, কিন্তু তার জন্য আপনাকে অনেক বেশী টাকা গুনতে হবে। তবে আর কিছুতে না চড়লেও বোট টা কোন অবস্থাতেই বাদ রাখবেন না। বিকালের পড়ন্তবেলাতে বোটের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা আপনাকে অনেক বেশী আনন্দ দেবে।

ফ্যান্টাসীতে প্রায়ই কনসার্ট হয়; ভাগ্যভালো হলে রথ দেখার সাথে সাথে কলা বেচাটাও সম্পন্ন হতে পারে। কিংডম গুলোর পসরা আপনার জন্য থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত। অতঃ রাত থাকতে গেলে আপনার ফিরে আসার চিন্তা বাদ দিয়ে রাখাই ভালো।
একা কোথাও না যাওয়াটাই শ্রেয়। তাই সঙ্গের প্রিয় জনকে রাখুন, যে কোন সিদ্বান্তে ত্বরিৎ তার মতটি জেনে নিন।


Click to see in Wikimapia

শনিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১১

বর্ষন্ত ও বর্ষরম্ভ

১লা জানুয়ারীর গুরুত্ত্ব একটু অন্যরকম ছিল ছোটবেলাতে। সাধারণত এই দিনটিতে শুরু হত নতুন ক্লাসের প্রথম পড়াশোনা। তখন খুব মনে হত কবে আমরা ২০০০ সাল দেখব আর কবেই বা দেখব ২০১০ সাল এমনি দুেরে দুরের সাল গুলো। এখন আর সেরকম আশাটি খুব বেশী একটা করি না। ইংরেজী নতুন বর্ষ আমার কাছে তেমন কোন প্রভাব ফেলত না। তবে বছরের শুরুতে অনেক অনেক চিন্তাভাবনা নিয়ে শুরু করতাম, কিন্তু বছেরে শেষে এসে তার খুব কমই মিলিয়ে দেখা হত।
বর্তমানে বছরের শেষ দিন থেকে শুরু করে বছরের প্রথম দিন পর্যন্ত খুবই উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায় তরুন তরুনীর মধ্যে। কিন্তু তার পর শূন্যতা। কত রকমের শুভকাঙ্খা থাকতে পারে তারই যেন প্রতিযোগীতা; মোবাইলের এসএমএস বহর, ফেসবুক নামক সমাজে পোস্টের পর পোস্ট আর তার সাথে রকমারী কমেন্টস। তারপর বছর শেষ। বছরের বাকী ৩৬৩ দিন আর কোন খবর রাখিনা আমরা; খবর রাখিনা একবারের জন্য আসা বছরটিকে আমরা কতটা ভালো রেখেছি। সরকার আর বিরোধী দল নামে প্রতিটি দিনকে স্মরনীয় করে রাখবার মেকী প্রতিযোগীতায়, আর তথা কথিত যুবারা নামে যুবতীকে কটাক্ষ করার ভুমিকায়। বছর প্রতিবছরই নিরাশ হয় আমাদের কাছে। আর কতদিন নিরাশ রাখব আর। আমরা কেন শুধু ওর কাছ থেকে ভালো ভালো চাইব কিন্তু নিজেরা ভালো কিছু করব না।

বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১০

বছরের শেষ; শুভ বিদায় ২০১০

কী অদ্ভুত ব্যাপার, ২০১০ আর কখনও আমাদের কাছে আসবে না; প্রতিনিয়ত আমরা তাকে হারাতে হারাতে এখন একদমই শেষ লগ্নে।

বছরটি আমার কাছে অনেকাংশে ঘটনাবহুল। বছরের শুরুতেই খুব সাহস করেই প্রতিষ্ঠিত চাকুরী ছেড়ে সফট্ওয়ার ফার্ম Leads এ যোগ দিয়েছিলাম। ঘটনাটি ছিল আমার কাছে অত্যন্ত সাহসিকতার। খুব বিপদ হত যদি কিনা আমার ভাগ্য আমার সহায় না হত। কিন্তু বছরের শুরুতেই ডিবিবিএল এর মৌখিক পরীক্ষার কার্ড আমার ভগ্ন মানসিকতাকে চাংগা করে তুলেছিল। হঠাৎ করেই রুগ্ন থেকে আমি হয়ে উঠেছিলাম সবল ও তরতাজা। বছরটি আমাকে সহায়তা করেছিল জীবনযাত্রার মান টাকে অনেক পরিবর্তন করতে। সরাসরি উত্তরা থেকে ধানমন্ডি। ভালোই যাচ্ছিল সবকিছু। কিন্তু ধীরে ধীরে কেমন যেন বাড়ী থেকে দুর হয়ে যাচ্ছি গদবাধা এই জীবনের জন্য। ক্ষনেক্ষনে অনেক কিছু হারাচ্ছি, নি:স্ব হবার আগেই আমাকে কিছু করতে হবে। জানি না আগামী বছর আমাকে কতটা সাহায্য করবে। স্বপ্নের জীবন থেকে আমি অনেক দূরে।জীবন বলতে আছে শুধু প্রানটি, আত্মা দিনদিন রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে। ওকে বাচানো খুব দরকার। চোখ বন্ধ করলে শুধুমাত্র বিপর্যয়ই চোখে পরে; আর কিছুই নয়। আমার চারিদিকে বিষন্নতা আমার দমটা আটকে ফেলে।আগামী বছর আমাকে উদ্ধার করলেই আমি বাঁচি