সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১১

সন্তানের জন্য যাত্রা শুরু

ছুটি নিয়ে অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম সন্তানের আগমনের সময়টাতে তার পাশে থাকবার জন্য। অনেক যোগ বিয়োগ করপে ১ সপ্তাহের একটা বুঝ তৈরী করেছিলাম। আগে একবার যেয়ে ফিরে আসি; পরের বার যাওয়ার আগে তাই বার বার হিসাব করে রওনা দিয়া। ৮ তারিখ দুপুরেই অফিস থেকে বের হওয়া। উদ্দেশ্য ১০ তারিখ স্ত্রীকে নিয়ে ক্লিনিকের উদ্দেশ্য রওনা দেওয়া। মাওয়া ঘাটে সন্ধ্যার শেষ লঞ্চের যাত্রী আমি। মাওয়া ধেকে খুলনা যাওয়ার মাইক্রোবাসও পথে খারাপ হল দু'বার। পথি মধ্যে দাদার সাথে ফোনে আলাপন; আলাপন ছিল শ্যামল দার সাথেও। যাহো কোন মতে ফকিরহাট যেয়ে পৌছালে দাদা এসে মোটর সাইকেলে করে বাড়ীতে নিয়ে যায়। তখনি শুনলাম,সন্তান আগমনের আঁচ কিছুটা পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু আজকেই নয়। বাড়ীতে যেয়ে খেতে বসলেই বুঝতে দেরী হয়নি আজকের রাতটি অনিদ্রাতেই কাটবে।
খেয়ে উঠেই ফোন করা হয়, ডা: লাকীর ক্লিনিকে। বারংবার অনুরোধের পরেও তারা সেরাতে যেথে নিষেধ করে বলে পাশ্ববর্তী কোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু আমরা সাহস না পাওয়াতে অনেকটা উদ্দেশ্যহীন ভাবেই মাইক্রোভারা করে আনার জন্য মেজ মামাকে ফোন করা হয়। মামা দেরী করে নি। অসুস্থ শরীরে শ্যামল দা আমাদের বাড়ীতে আসেন এবং বলেন এই মুহূর্তে সব থেকে ভালো সিদ্বান্ত হবে খুলনা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া; কারণ ওখানে যতটা চিকিৎসাজনিত সুবিধা পাওয়া যাবে অন্য কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে তার কানা কড়িও পাওয়া যাবে না।
অনুরোধের কারণে শ্যামল দা অসুস্থ শরীরেও আমাদের ষাথে যেতে রাজী হন। যদিও উনি শেষ রাতের দিকে বাড়ীর উদ্দেশ্য রওনা হয় সঙ্গে আমার একমাত্র সম্ভল দাদকে নিয়ে। ভর্তি করা হয় লেবার এর জেনারেল ওয়ার্ডে। উদ্দেশ্য ছিল কেবিনে ভর্তি করা। কিন্তু সবাই পরামর্শ দিল, কেবিনে ভর্তি হলে রাতে বার বার ডাক্তাররা যেয়ে দেক আপ করতে আগ্রহী হয় না। সূতরং আপাতত কাছে থাকাটাই ফলপ্রদ হবে।

রুমের মধ্যে প্রবেশ মাত্রজ আমার মধ্য একটা প্রশ্ন দেখা দিল এখানে যেসব ডাক্তাররা ডিউটি করে তারা কিভাবে সেখানে অবস্থান করে। প্রতিনিয়ত হবু মাদের চিৎকার ও চেঁচামিচি নির্দয় মানুষকেও আবেগ তাড়িত ও ভীত করে তুলবে। সারা রাত সেই দৃশ্য অবলোকন করার মধ্যে দিএয় বোধোদয় এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বের হওয়া দরকার। আআমার স্ত্রীর কিছুটা নরমাল ডেলীভারীর ইচ্ছা তাকলেও ওখানে যেযে সেটুকুও দূর হেয় গেল। শ্যামল দাকে বাড়তে এগিয়ে দিয়েই দাদ আবার ফিরে আেস আমার কাছে। সকাল হতে না হতেই ক্লিনিকের সাথে যোগাযোগ করে রওনা দিলাম তার উদ্দেশ্য। সেখানে যেয়ে খুব বেশী দেরী করেত হয়নি। সবাই যেন আমাদের জন্যিই প্রস্তুত ছিল।

অবশেষে সকাল ৯:৪৫ মিনিটে সন্তান তার মায়ের শত কষ্টের অবসান ঘটিয়ে আলোর মুখ দেখে এই ধরণীর। ওর উৎসুক, উৎফুল্ল, উদ্ভাসিত চোখগুলো আমি কখনও ভুলব না।

কোন মন্তব্য নেই: